ব্রেস্টে
ব্যথা মানেই ব্রেস্ট ক্যান্সার নয়
আমাদের
সেন্টারে যত সংখ্যক ব্রেস্টের সমস্যা নিয়ে রোগী আসেন তার মধ্যে শতকরা ৬০ ভাগ রোগীই
আসেন ব্রেস্টের ব্যথা জনিত কারণে এবং প্রত্যেকেই মানসিক ভাবে প্রচণ্ড ভেঙ্গে পড়েন
এই ভেবে যে তাদের ব্রেস্ট ক্যান্সার হয়েছে। কিন্তু মনে
রাখবেন ব্রেস্টে ব্যথা মানেই ব্রেস্ট ক্যান্সার নয় । বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই
এই ব্যথার সাথে ক্যান্সার এর সম্পর্ক নেই।
ব্রেস্টের ব্যথাকে তিন ভাগে ভাগ করা
যায়:
১। মাসিকের সাথে সম্পর্ক যুক্ত বাথাঃ
মাসিকের আগে
যে ব্যথা হয়। সাধারনত ব্রেস্টের বাইরের এবং উপরের দিকের অংশে এই ব্যথা হয়। পুরো
সাইকেল জুড়েই এই ব্যথা থাকে। কখনও এটি তীব্র হয়, তবে সময়ের সাথে সাথে এই ব্যথা চলে
যায়। সাধারনত ৩০ - ৪০ বছর বয়সী মহিলাদের এ ধরনের ব্যথা হয়। ধারণা করা হয় হরমোন
জনিত কারণে এই ব্যথা হতে পারে। এই ব্যথা ক্যান্সার এর সাথে সম্পর্ক যুক্ত নয়।
২। মাসিকের সাথে সম্পর্ক যুক্ত নয় ব্যথাঃ
এই ব্যথা মাসিকের
সাথে সম্পর্ক যুক্ত নয়। ব্রেস্টের যে কোন জায়গায় এই ব্যথা হতে পারে। সাধারণত ৪০ -
৫০ বছর বয়সী মহিলাদের এই ব্যথা হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এই ব্যথার কারণ জানা যায় না।
এটি স্নায়ু জনিত ব্যথা। তবে অন্যান্য যে সব কারণে এই ব্যথা হতে পারে তা হল ইনফেকশন,
ব্রেস্টে আঘাত পাওয়া, ব্রেস্ট সিস্ট, টিউমার এবং কিছু ঔষধ এর কারণে। এই ব্যথাও
ক্যান্সার এর সাথে সম্পর্ক যুক্ত নয়।
৩। ব্রেস্টের বাইরের ব্যথাঃ
সাধারনত বুকের
খাঁচায় সমস্যার জন্য ব্রেস্টে এই ব্যথা হতে পারে।
আপনাকে
নিম্নলিখিত পরিবর্তন গুলো খেয়াল রাখতে হবেঃ
১। ব্যথার
তীব্রতা
২। ব্রেস্টের
কোন অংশে ব্যথা
৩। কোন কার্যকলাপে
ব্রেস্টের ব্যথা বেড়ে যায় কিনা।
৪। ব্যথার
সাথে অন্যান্য উপসর্গ যেমন ব্রেস্টে চাকা, চামড়ার রঙ পরিবর্তন বা স্তন থেকে কষ
নির্গত হওয়া।
৫। মাসিকের
সাথে সম্পর্ক যুক্ত কিনা
৬। ঔষধ
সংক্রান্ত ইতিহাস
৭। পারিবারিক
ইতিহাস
ব্রেস্টে
ব্যথা ও ক্যান্সারঃ
মনে রাখবেন ব্রেস্ট ক্যান্সার এ সাধারণত ব্রেস্টে ব্যথা হয় না। তবে
ক্যান্সার যখন Advance Stage এ চলে গিয়ে চামড়া অথবা
বুকের মাংসে ছড়িয়ে যায় তখন ব্যথা হয়।
কখন
বিশেষজ্ঞর পরামর্শ প্রয়োজনঃ
১। ব্রেস্টের
ব্যথা দুই মাসের বেশি হলে।
২। ব্রেস্টের
একটি নির্দিষ্ট স্থানে ব্যথা যা দিন দিন বেড়েই চলেছে।
৩। ব্যথার
সাথে চাকা অনুভূত হলে, চামড়ার রঙ পরিবর্তন অথবা নিপল দিয়ে কষ নির্গত হলে।
এই সব ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞর পরামর্শ নিয়ে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা নিরীক্ষা করিয়ে
নিশ্চিত হতে হবে এর সাথে ব্রেস্ট ক্যান্সার এর সম্পর্ক নাই।। এতে বিশেষজ্ঞ ও রোগী
দুজনেই আশ্বস্ত হবেন।
পরীক্ষায় যদি ব্রেস্ট ক্যান্সার নেই প্রমাণিত হয় তবুও রোগীকে অবশ্যই ফলোআপ
এ থাকতে হবে।