Friday, 10 April 2015

ব্রেস্টের নিপল থেকে কষ বের হলে


ব্রেস্টের নিপল থেকে কষ বের হওয়া বলতে যে কোন জলীয় বা তরল পদার্থ ব্রেস্টের নিপল হতে নির্গত হওয়াকে বোঝায় । নিপল হতে তরল পদার্থের নিঃসরণ ব্রেস্টের একটি অন্যতম প্রধান সমস্যা । প্রায় ৫০ থেকে ৮০ ভাগ প্রজননক্ষম মহিলার ব্রেস্ট হতে স্বাভাবিক নিয়মেই এক বা কয়েক ফোঁটা তরল পদার্থ নিঃসৃত হতে পারে ।

করনীয় কি ?
ব্রেস্টের নিপল থেকে নিঃসরণ হলে মহিলাদের যত দ্রুত সম্ভব বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে । নিঃসৃত নালীর সংখ্যা এবং তরল পদার্থের রং দেখে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক পরবর্তী পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নেবেন । যেমন - আলট্রাসনগ্রাম, ম্যামোগ্রাম, ডাকটোগ্রাম এবং নিঃসৃত পদার্থের সাইটোলজি পরীক্ষা ।

নিঃসরণের প্রকারভেদের উপর ভিত্তি করে রোগীকে তিনটি শ্রেণীতে বিভক্ত করা হয় -
১। অত্যধিক ঝুঁকিপূর্ণ
২। স্বল্প ঝুঁকিপূর্ণ
৩। মধ্যম ঝুঁকিপূর্ণ
 
১। অত্যধিক ঝুঁকিপূর্ণ -
  • এক পাশের ব্রেস্ট হতে নিঃসরণ হলে ।
  • একটি নালি হতে নিঃসরণ হলে ।
  • স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে নিঃসরণ হলে ।
  • নিঃসরণের বর্ণ -
    • পানির মত
    • ঘোলা
    • রক্ত মেশা
২। স্বল্প ঝুঁকিপূর্ণ -
  • উভয় ব্রেস্ট হতে নিঃসরণ হলে ।
  • বহু নালী হতে নিঃসরণ হলে ।
  • চাপ প্রয়োগ করার পর নিঃসরণ হলে ।
  • নিঃসরণের বর্ণ -
    • সবুজাভ
    • দুধের মত
৩। মধ্যম ঝুঁকিপূর্ণ -
  •  নিঃসরণের বর্ণ - ঘন দুধ অথবা ছাই রঙা হলে ।
গর্ভবতী অথবা স্তন্যদানকারী মহিলা ব্যতিত ব্রেস্টের নিপল এর নিঃসরণ মানেই সবসময় অস্বাভাবিক  নয় । তবে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অবশ্যই নিতে হবে ।

Sunday, 15 March 2015

ব্রেস্টে ব্যথা মানেই ব্রেস্ট ক্যান্সার নয়


ব্রেস্টে ব্যথা মানেই ব্রেস্ট ক্যান্সার নয়


 
আমাদের সেন্টারে যত সংখ্যক ব্রেস্টের সমস্যা নিয়ে রোগী আসেন তার মধ্যে শতকরা ৬০ ভাগ রোগীই আসেন ব্রেস্টের ব্যথা জনিত কারণে এবং প্রত্যেকেই মানসিক ভাবে প্রচণ্ড ভেঙ্গে পড়েন এই ভেবে যে তাদের ব্রেস্ট ক্যান্সার হয়েছে। কিন্তু মনে রাখবেন ব্রেস্টে ব্যথা মানেই ব্রেস্ট ক্যান্সার নয় । বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই ব্যথার সাথে ক্যান্সার এর সম্পর্ক নেই।



ব্রেস্টের ব্যথাকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়:

১। মাসিকের সাথে সম্পর্ক যুক্ত বাথাঃ

মাসিকের আগে যে ব্যথা হয়। সাধারনত ব্রেস্টের বাইরের এবং উপরের দিকের অংশে এই ব্যথা হয়। পুরো সাইকেল জুড়েই এই ব্যথা থাকে। কখনও এটি তীব্র হয়, তবে সময়ের সাথে সাথে এই ব্যথা চলে যায়। সাধারনত ৩০ - ৪০ বছর বয়সী মহিলাদের এ ধরনের ব্যথা হয়। ধারণা করা হয় হরমোন জনিত কারণে এই ব্যথা হতে পারে। এই ব্যথা ক্যান্সার এর সাথে সম্পর্ক যুক্ত নয়।

২। মাসিকের সাথে সম্পর্ক যুক্ত নয় ব্যথাঃ

এই ব্যথা মাসিকের সাথে সম্পর্ক যুক্ত নয়। ব্রেস্টের যে কোন জায়গায় এই ব্যথা হতে পারে। সাধারণত ৪০ - ৫০ বছর বয়সী মহিলাদের এই ব্যথা হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এই ব্যথার কারণ জানা যায় না। এটি স্নায়ু জনিত ব্যথা। তবে অন্যান্য যে সব কারণে এই ব্যথা হতে পারে তা হল ইনফেকশন, ব্রেস্টে আঘাত পাওয়া, ব্রেস্ট সিস্ট, টিউমার এবং কিছু ঔষধ এর কারণে। এই ব্যথাও ক্যান্সার এর সাথে সম্পর্ক যুক্ত নয়। 

৩। ব্রেস্টের বাইরের ব্যথাঃ

সাধারনত বুকের খাঁচায় সমস্যার জন্য ব্রেস্টে এই ব্যথা হতে পারে।


আপনাকে নিম্নলিখিত পরিবর্তন গুলো খেয়াল রাখতে হবেঃ

১। ব্যথার তীব্রতা

২। ব্রেস্টের কোন অংশে ব্যথা

৩। কোন কার্যকলাপে ব্রেস্টের ব্যথা বেড়ে যায় কিনা।

৪। ব্যথার সাথে অন্যান্য উপসর্গ যেমন ব্রেস্টে চাকা, চামড়ার রঙ পরিবর্তন বা স্তন থেকে কষ নির্গত হওয়া।

৫। মাসিকের সাথে সম্পর্ক যুক্ত কিনা

৬। ঔষধ সংক্রান্ত ইতিহাস

৭। পারিবারিক ইতিহাস
 

ব্রেস্টে ব্যথা ও ক্যান্সারঃ
 
মনে রাখবেন ব্রেস্ট ক্যান্সার এ সাধারণত ব্রেস্টে ব্যথা হয় না। তবে ক্যান্সার যখন Advance Stage এ চলে গিয়ে চামড়া অথবা বুকের মাংসে ছড়িয়ে যায় তখন ব্যথা হয়।
 
 
কখন বিশেষজ্ঞর পরামর্শ প্রয়োজনঃ

১। ব্রেস্টের ব্যথা দুই মাসের বেশি হলে।

২। ব্রেস্টের একটি নির্দিষ্ট স্থানে ব্যথা যা দিন দিন বেড়েই চলেছে।

৩। ব্যথার সাথে চাকা অনুভূত হলে, চামড়ার রঙ পরিবর্তন অথবা নিপল দিয়ে কষ নির্গত হলে।


এই সব ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞর পরামর্শ নিয়ে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা নিরীক্ষা করিয়ে নিশ্চিত হতে হবে এর সাথে ব্রেস্ট ক্যান্সার এর সম্পর্ক নাই।। এতে বিশেষজ্ঞ ও রোগী দুজনেই আশ্বস্ত হবেন।


পরীক্ষায় যদি ব্রেস্ট ক্যান্সার নেই প্রমাণিত হয় তবুও রোগীকে অবশ্যই ফলোআপ এ থাকতে হবে।

 

Friday, 27 February 2015

ব্রেস্ট ক্যান্সার সচেতনতা ১০টি টিপস

ব্রেস্ট ক্যান্সার সচেতনতা ১০টি টিপস




  ভয় পাবেন না!! ব্রেস্ট ক্যান্সার নিরাময় যোগ্য প্রাথমিক অবস্থ্য়া ধরা পড়লে প্রায় সম্পূর্ণ সুস্থ হওয়া নিশ্চিত


  বয়স ৪০ পার হলে প্রতি বছর ম্যামোগ্রাম করান যদি পারিবারিক ইতিহাস (Ovary বা Breast Cancer ) থাকে তবে আরো আগেই শুরু করুন



BSE (নিজের ব্রেস্ট নিজে পরীক্ষা করা) শুরু করুন অতি শীঘ্র প্রতি সপ্তাহে আমরা এমন অনেক রোগী দেখি যারা BSE করে নিজেদের জীবন বাঁচিয়েছেন


  মা/বাবার দিকের (খালা/ফুফু) কারো এই অসুখ ছিল বা আছে কিনা জানার চেষ্টা করুন, যা আপনার এবং আপনার বোন/ মেয়ের জন্য জরুরী


ম্যামোগ্রাম স্বাভাবিক থাকলেও যদি ব্রেস্ট বা বোটায় কোন পরিবর্তন লক্ষ্য করেন, তবে দ্রুত চলে আসুন কোন ইমেজিংই ১০০ ভাগ নির্ভুল নয়


  বোঁটায় চুল / ছোট চাকা / দুই বোঁটা থেকে রস (যা হলুদ বা সবুজ) সবই স্বাভাবিক ব্রেস্টে চুলকানি বা তীব্র ব্যথাও অনেকেরই হয় বোটা থেকে রক্ত মিশ্রিত রস/একদিকে খসখসে চামড়া/একদিকে পানি বের হওয়া এগুলো স্বাভাবিক নয় যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ডাক্তার দেখান


সার্জন / গাইনকলজিস্ট / অনকলজিস্ট / মেডিসিন বিশেষজ্ঞ যে কারো সাহায্য আপনি নিতে পারেন


ধুমপান বন্ধ করুন পান খাবেন না


  ওজন নিয়ন্ত্রনে রাখুন কম চর্বি বেশী আঁশযুক্ত খাবার খান নিয়মিত ব্যায়াম করুন



১০ খুব বেশী কোমল পানীয় খাবেন না যেমন- কোক, পেপসি, মিরিন্ড, সেভেনআপ-দিনে বোতলের বেশী কোন ভাবেই নয়